অয়েলি স্কিন, বিউটি টিপস

৫টি ধাপে অয়েলি স্কিনের নাইট টাইম স্কিনকেয়ার রুটিন

য়েলি স্কিনের ক্ষেত্রে আমরা ধরে নেই যে গ্রিজিনেস, একনে, ব্রেকআউটস, ব্ল্যাকহেডস- এই সমস্যাগুলো একটু বেশিই হবে! কিন্তু সঠিক নিয়মে যত্ন নিলেই কিন্তু অয়েলি স্কিনের এই প্রবলেমগুলো কমিয়ে আনা সম্ভব। দিনশেষে স্কিনকেও তো রেস্ট দিতে হবে এবং প্রোপারলি নাইট টাইম স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করতে হবে। মাত্র ৫টি ধাপে অয়েলি স্কিনের PM স্কিনকেয়ার রুটিন কীভাবে মেনটেইন করা যায়, চলুন জেনে নেই আজ।

স্কিন টাইপ অনুযায়ী প্রোডাক্ট সিলেকশন

যখন সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে সেবাম বা অয়েল প্রোডিউস হয়, তখনই স্কিন বেশি অয়েলি দেখায়। এই ধরনের স্কিনের ক্ষেত্রে অয়েল কন্ট্রোল করা, একনে প্রিভেন্ট করা ও ময়েশ্চার ব্যালেন্স ঠিক রাখাই মেইন কনসার্ন। বার বারই বলা হয়ে থাকে, স্কিন টাইপ অনুযায়ী প্রোডাক্ট চুজ করুন। ড্রাই স্কিনের যত্নে যে ধরনের ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা হয়, আপনার স্কিন অয়েলি হলে সেগুলো কিন্তু তেমন কোনো বেনিফিট দিবে না, খুবই সিম্পল ব্যাপার! তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী স্কিনকেয়ার রেঞ্জ সিলেক্ট করা জরুরি।

মাত্র ৫টি ধাপে অয়েলি স্কিনের PM রুটিন

১) ডাবল ক্লেনজিং

১ম স্টেপে মাইসেলার ওয়াটার- দিনশেষে স্কিন ভালোভাবে ক্লিন করে নিন যাতে পোরস ক্লগড হয়ে ব্রেকআউটস বা একনে না হয়। অয়েলি স্কিনের জন্য অয়েল ক্লেনজার বা অয়েল বেইজড মেকআপ রিমুভারের অল্টারনেট হিসেবে মাইসেলার ওয়াটার বেছে নিতে পারেন। মাইসেলার ওয়াটারে মূলত মাইল্ড সারফেকট্যান্ট ও পিউরিফাইড ওয়াটার থাকে, যা ইনস্ট্যান্টলি আপনার স্কিন থেকে মেকআপ, সানস্ক্রিন, ডার্ট খুব ভালোভাবে ক্লিন করবে। ২য় স্টেপে ফোম ক্লেনজার বা ফেইস ওয়াশ- এরপর এমন ফেইস ওয়াশ বা ফোম ক্লেনজার বেছে নিন যেটা স্পেশালি অয়েলি স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড। যেমন গ্রিন ক্লে, চারকোল, টি ট্রি অয়েল, নিম, গ্রিন টি এই উপাদানগুলো অয়েল কন্ট্রোলে দারুণ কার্যকরী।

২) টোনিং

বেসিক স্কিনকেয়ারের একটি ইম্পরট্যান্ট পার্ট হচ্ছে টোনিং, যেটা অনেকেই স্কিপ করেন। স্কিন টাইপ অনুযায়ী টোনারের ইনগ্রেডিয়েন্ট ও ফর্মুলেশন ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। অয়েলি স্কিনের জন্য চুজ করতে হবে ম্যাটিফায়িং, অয়েল ব্যালেন্সিং টোনার। অয়েলি স্কিনে টোনারের কাজটা আসলে কী, সেটা নিয়ে অনেকেই কনফিউজড থাকেন! টোনিং এর মাধ্যমে ত্বকের পি এইচ ব্যালেন্স রিস্টোর হয়, সেবাম প্রোডাকশন কন্ট্রোলে থাকে, নেক্সট স্টেপের জন্য স্কিন রেডি হয়।

৩) সিরাম

আপনার বয়স ২০+ হলে এবং আপনি যদি প্রোপার স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করে থাকেন, তাহলে নাইট টাইম স্কিনকেয়ারে সিরাম ইনক্লুড করুন। সিরামে হাইলি কনসেন্ট্রেটেড অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট থাকে যা স্কিনের ডিপ লেয়ারে খুব সহজেই পেনিট্রেট করে এবং স্পেসিফিক স্কিন কনসার্ন টার্গেট করেই কাজ করে। অয়েলি স্কিনের জন্য কোন কোন অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো আসলেই হেল্পফুল, চলুন জেনে নেই এক নজরে।হায়ালুরোনিক অ্যাসিড স্কিনের হাইড্রেশন ধরে রাখে ও সেবাম প্রোডাকশন কমিয়ে আনে

স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ডেড সেলস দূর করে এবং একনে, ব্ল্যাকহেডস, এক্সেস অয়েলিনেস প্রিভেন্ট করে

নিয়াসিনামাইড ওপেন পোরসের ভিজিবিলিটি কমিয়ে আনে ও সেবাম প্রোডাকশন রেগুলেট করে

রেটিনল সেল টার্নওভার বাড়িয়ে এজিং সাইনস প্রিভেন্ট করে; সেবাম প্রোডাকশন কমিয়ে আনে

ভিটামিন সি ব্রাইটেনিংয়ে কাজ করে, স্পটস কমিয়ে আনে

তাহলে স্কিনের কনসার্ন অনুযায়ী নাইট টাইম স্কিনকেয়ার রুটিনে সিরাম অ্যাড করে ফেলুন। হুট করে সব নতুন প্রোডাক্ট একসাথে স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করা যাবে না। প্রথমে একদম লো পারসেন্টেজ দিয়ে স্টার্ট করুন, প্যাচ টেস্ট করে স্কিনকেয়ারে ইনক্লুড করুন।

৪) নাইট ক্রিম

নেক্সট স্টেপ হচ্ছে ময়েশ্চারাইজিং। সেক্ষেত্রে আপনি নাইট ক্রিম বেছে নিতে পারেন যা ত্বকে প্রোপার নারিশমেন্ট, ময়েশ্চারাইজেশন ও হাইড্রেশন প্রোভাইড করতে পারে। অয়েল ফ্রি, লাইট ওয়েট ফর্মুলার নাইট ক্রিম সিলেক্ট করুন। নাইট ক্রিম ময়েশ্চারাইজেশনের সাথে সাথে স্কিন সেলস রিনিউ করে, রিংকেলস কমাতে হেল্প করে। এক্সট্রা কেয়ারের জন্য সপ্তাহে ২/৩ দিন স্লিপিং মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন। নাইট ক্রিম জেন্টল ফর্মুলার যা রেগুলার ইউজ করা যায় এবং এতে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের কনসেনট্রেশন তুলনামূলক কম থাকে। অন্যদিকে স্লিপিং মাস্ক পাওয়ারফুল উইকলি ট্রিটমেন্ট হিসেবে কাজ করে, কারণ এতে হাই কনসেনট্রেশনের অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহৃত হয়। স্লিপিং মাস্ক অ্যান্টি এজিংয়ে কাজ করে, স্পটস ফেইড করে, ড্যামেজড স্কিন ব্যারিয়ার রিপেয়ার করে। আশা করি, নাইম ক্রিম ও স্লিপিং মাস্ক এর বেসিক ডিফারেন্সটা বুঝতে পেরেছেন।

৫) আইক্রিম

অনেকেরই ধারণা যে ড্রাই স্কিনে আই এরিয়াতে এজিং সাইনস বেশি ভিজিবল হয় আর আইক্রিম শুধুমাত্র তাদের জন্যই! না, অয়েলি স্কিন হলেও আপনার চোখের চারপাশে কিন্তু অয়েল গ্ল্যান্ড নেই। তাই আই এরিয়ার জন্য দরকার প্রোপার ময়েশ্চারাইজেশন। নাইট টাইম স্কিনকেয়ারের অ্যাসেনশিয়াল স্টেপ হচ্ছে আইক্রিম অ্যাপ্লাই করা, স্কিন টাইপ যেমনই হোক। আইক্রিম দিয়ে জেন্টলি ম্যাসাজ করুন আই এরিয়া, এতে ব্লাড সার্কুলেশন ইম্প্রুভ হবে। ধীরে ধীরে রিংকেলস, ডার্ক সার্কেল ও পাফিনেস কমে আসবে।

খেয়াল রাখুন কিছু বিষয়

১. অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহারে সতর্ক হোন

স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বেইজড টোনার ব্যবহার করলে এই সেইম উপাদানযুক্ত সিরাম কিন্তু একই সময়ে অ্যাপ্লাই করবেন না। এতে স্কিন ওভার এক্সফোলিয়েটেড ও ওভার ড্রাই হয়ে যেতে পারে। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ টোনারের পর চাইলে আপনি হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বেইজড সিরাম অ্যাপ্লাই করতে পারে। আবার যদি আপনি নিয়াসিনামাইড যুক্ত টোনার ব্যবহার করেন, তাহলে এরপর স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সিরাম অ্যাপ্লাই করতে পারেন। উইকে দু’বার রাতে রেটিনল ব্যবহার করলে ঐ সময়ে AHA ও BHA বেইজড কিছু অ্যাপ্লাই করবেন না। এভাবে ব্যালেন্স করতে হবে ইনগ্রেডিয়েন্টে।

২. ওভার ওয়াশ করা যাবে না

অয়েলি স্কিন মানেই যে বার বার সেটা ওয়াশ করতে হবে, এমনটি না কিন্তু! ওভার ওয়াশের ফলে ন্যাচারাল অয়েল রিমুভ হয়ে যায় এবং সেটিকে ব্যালেন্স করতে সেবাসিয়াস গ্ল্যান্ড আরও বেশি পরিমাণে সেবাম প্রোডিউস করে। তাই দিনে ও রাতে দু’বার ক্লেনজিংই যথেষ্ট।

৩. হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করুন

ফুডচার্টে কার্ব ও সুগারের পরিমাণ একদম কমিয়ে আনুন। হেলদি ফুড হ্যাবিটে অভ্যস্ত হোন। তেলে ভাজা খাবার, প্রসেসড ফুড, অতিরিক্ত কার্ব, মিষ্টি, আইসক্রিম, পেস্ট্রি, চিজ এগুলো এড়িয়ে চলুন। রেগুলার অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করুন। স্ট্রেস ফ্রি থাকার ট্রাই করুন, হেলদি লাইফস্টাইল মেনটেইন করুন।

তাহলে জেনে নিলেন, ৫টি ধাপে অয়েলি স্কিনের নাইট টাইম স্কিনকেয়ার কীভাবে করা যায়। সেই সাথে আমরা আরও কিছু টিপস জেনে নিলাম। নিজেকে সময় দিন, নিজের যত্ন নিন। নিয়ম মেনে ত্বকের যত্ন নিলে ও লাইফস্টাইলে চেঞ্জ আনলেই অয়েলি স্কিন থাকবে হেলদি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *